Monthly Archives: March 2012

জীবনের অঙ্ক ও কোকাকোলার গাড়ি

Standard
মানুষের জীবন অঙ্কনির্ভরজীবনের অঙ্ক ভুল হওয়া মানেই কর্মক্ষেত্রে বিপর্যটা ঘটাযার জীবনের অঙ্ক যতো নির্ভুল তার জীবন ততো স্বচ্ছো ও নির্মলহাটখোলার মোড় থেকে প্রকাশিত দৈনিকটির একটি বিজ্ঞাপনের ভাষ্য থেকে ওপরের অংশটুকু নেয়া বিজ্ঞাপনের শিরোনাম জীবনের অঙ্কপাঠকরা ইতিমধ্যেই টের পেয়েছেন, এটি একজন জ্যোতিষ বাবাজির বিজ্ঞাপনতিনি অভয় দিয়ে জানাচ্ছেন, যাদের জীবনের অঙ্ক মিলছে না- তাদের জীবনের অঙ্ক মিলিয়ে দেবেনমহ প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহেযুগে যুগে এসব ধর্মাবতাররা মানুষের জীবনের অঙ্ক মিলিয়ে দেবার জন্য কতোই না কষ্ট করেছেনপরিশ্রম করে, বুদ্ধি খাটিয়ে, নানা রকম ফন্দি-ফিকির বের করেছেন, যাতে করে বোকা, অসহায়, অদৃষ্টবাদী মানুষের জীবনের অঙ্ক মিলিয়ে দেওয়া যায়বিনিময়ে তারা কিইবা পান- সমাজে যথেষ্ট সম্মান পান না, আমার মতো দুপাতা বিজ্ঞান পড়া লোকেরা তাদের নিয়ে ইয়ারকি-ফাজলামো করেশুধু তাই নয়, ইনকাম ট্যাক্সের লোকজনও মাঝে-মধ্যে জ্বালাতন করেভাবখানা- না জানি কতো টাকা তারা কামিয়ে নিচ্ছেনকেউ যদি কলাটা মূলোটা দেয়- তা নেওয়া কি দোষেরপাঠক, আপনিই বিচার করুন
যাকগে, অঙ্কবিদের কথা থাকবরং জীবনের অংকের উপত্তিটা খোঁজা যাকপ্রাচীন গ্রীসের এক গণিতবিদ পিথাগোরাস। (ভদ্রলোকের নাম বহুল পরিচিতস্কুল জীবনে তার নামে পরিচিত একটি জ্যামিতিক উপপাদ্য বিশ্লেষণে অক্ষম হয়ে মাস্টার মশাইয়ের চড়-থাপ্পড় খাওয়ার ইতিহাস সহজে ভুলে যাবার নয়)পিথাগোরাস শুধু গণিতবিদ ছিলেন না, তিনি একজন দার্শনিকও ছিলেনবলা হয় দার্শনিক, মানে ফিলজফার, শব্দটি তিনিই প্রথম ব্যবহার করেনএই পিথাগোরাস মনে করতেন জগতের সবকিছুর মূলে রয়েছে সংখ্যাপিথাগোরাস ও তার শিষ্যদের (পিথাগোরিয়ান নামে পরিচিত) চেষ্টায় এই সংখ্যা তত্ত্বের (?) বিকাশতারা মানুষদেরও সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করতেনএই সংখ্যা মেলানোর ব্যাপার থেকেই আধুনিক প্রতারণা তত্ত্ব নিউমারোলজির উদ্ভব ও বিকাশনিউমারোলজিতে বলা হয়Ñ প্রাণীদের মতো সংখ্যারও চরিত্র আছে! (সর্বনাশ!) যেমন- জোড় সংখ্যার মানেই অশুভজোড় সংখ্যারা হলো স্ত্রীউল্টোদিকে বেজোড় সংখ্যা পুরুষ, তারা শুভ সূচক। (বোঝা যায়, পিথাগোরিয়ানরাও নারীবিদ্বেষী ছিলেন)এছাড়া ১ থেকে ৮-এই সংখ্যাগুলোর আলাদা স্বভাব১-কর্মঠ ও ইতিবাচক, ২-আলসে আর ভিতু, ৩-ভাগ্যবান, ৪-বাস্তবজ্ঞানসম্পন্ন, ৫-অভিযানপ্রিয়, ৬-গৃহী, ৭-সন্ন্যাসী, ৮-সংসারী ইত্যাদিঅবশ্য এসব নিয়ে আবার কিছু মতভেদও আছে
প্রত্যেক মানুষের জন্ম তারিখ বা তার নামের বর্ণগুলোর যোগফল তার ব্যক্তিত্ব ও ভবিষ্য সম্পর্কে অনেক কথা বলতে পারে বলে নিউমারোলজিতে বলা হয়, (চাপাবাজি আর কি!) এক্ষেত্রে ৯ থেকে বড় সংখ্যার অঙ্কগুলো পাশাপাশি যোগ করে নিতে হবেযেমন- ২৩৮ হবে ২+৩+৮ ১৩ = ১+৩ =৪
এভাবে জন্মদিনের তারিখ প্রত্যেকের শুভ সংখ্যাসপ্তাহের কোনদিন ছিল জন্মদিন সেই সংখ্যাও নাকি শুভশুভ সংখ্যার সঙ্গে নামের সংখ্যায় মিল করার জন্য অনেকে নামের বানানও পরিবর্তন করে ফেলে! এই ধরনের প্রচেষ্টার ফলে অনেক সময় আবদুল হয় আবদেল, কমলা হয় ক্যামেলিয়া কিংবা সলিমুদ্দি হয় সেলিম-দীন ইত্যাদি
নিউমারোলজি একটি প্রমাণিত চাপা শাস্ত্র হওয়ার পরেও মানুষের অজ্ঞতা ও অলৌকিকত্বে বিশ্বাসকে পুঁজি করে একদল অঙ্কবিদতাদের সম্পদ গড়ে তুলছেজ্ঞানবিজ্ঞানের ভালো রকমের প্রসার না হলে এসব জোচ্চারদের হাত থেকে সমাজের নি®কৃতি নেইমুশকিল হচ্ছে, এ সবের বিরুদ্ধে লড়ার মতো লোকবলের বড়োই অভাব
একটি বহুজাতিক কোম্পানি তাদের কোমল পানীয় পানের সঙ্গে গাড়ি, টাকা, ফুটবল পুরস্কার দিচ্ছেপত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরগুলো থেকে দেখা যায়, গাড়ি পাবার আশায় কোমল পানীয়ের প্রতি মানুষের আকর্ষণ াত্যাধিক বৃদ্ধি পেয়েছেবাংলাদেশের বিখ্যাত পীর/জ্যোতিষদের কেই কি আমাকে বলতে পারবেন, কোন পাথর ব্যবহার করলে আমি অবশিষ্ট দুখানা গাড়ির একটির মালিক হতে পারবো?

প্রতারণার কোয়ান্টাম মেথড

Standard
কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি মিলনায়তনের একটি অনুষ্ঠানের খবর আমরা জানতে পারি পরদিন প্রকাশিত দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের পরিবেশিত সংবাদ থেকেএর শিরোনাম ছিল আচ্ছন্ন তন্দ্রায় নাকডাকা প্রশান্তিখবরের অংশ বিশেষ- ভার্সিটির ছাত্র, শিক্ষক সরকারী অফিসার ও উসুক তরুনেরা মহাজাতকের প্রশান্তিকরণ ক্যাসেটের সুরময় অনুনাদে দুই দুইবার আচ্ছন্ন তন্দ্রায় নাকও ডাকিতে শুরু করেন। … জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর নুরুল ইসলাম এটিকে কেবল উকণ্ঠা নয়, ৪০ ভাগ শারীরিক জরামুক্তির সংগ্রাম হিসেবেও মূল্য দিয়াছেনউক্ত সভার প্রধান বক্তা শহীদ আল বোখারী (মহাজাতক) যেসব জ্ঞানগর্ভ উপদেশ খয়রাত করেন তার মূল কথা হলো- একমাত্র আহাম্মকের ভবিষ্য ভাগ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ঐ দিনের ঐ দৈনিকেরই প্রথম পাতায় একটি বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছেবিজ্ঞাপনটির অংশবিশেষ- নিজেই নিজের ভাগ্য নিয়ন্তা হোনমাত্র ২৮ ঘণ্টায় ব্যর্থতা থেকে সাফল্যের পথে যাত্রা শুরু করুনমন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এখন বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করছেবরেণ্য ভবিষদ্রষ্টা ও যোগ-গুরু মহাজাতক এখন শেখাচ্ছেন মন নিয়ন্ত্রণের সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কোয়ান্টাম মেথড…
বিজ্ঞাপনের ভাষ্য অনুযায়ী এর মাধ্যমে ছোট বড় নারী-পুরুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা অর্জন থেকে শুরু করে অর্থ-বিত্ত, ব্যবসা, পদোন্নতি, খ্যাতি ইত্যাদি সবই পাওয়া যাবেকোর্সটি হবে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলেবিজ্ঞাপনে অবশ্য কোর্স ফি উল্লেখ করা হয়নিতাহলে জানা যেত, আহাম্মকদের ঘাড়ে মহাজাতক কত টাকার কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছেনমন নিয়ন্ত্রণের বৈজ্ঞানিকপদ্ধতি বলে আসলে কিছু নেইতদুপরি- সেটা কোয়ান্টামহবার কোনো কারণও নেইপদার্থবিজ্ঞানের যে শাখাটি কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা বা কোয়ান্টাম মেকানিক্স নামে পরিচিত, তার সঙ্গে এই কোর্সের কোন সম্পর্ক নেইআছে প্রতারণার সম্পর্ককোয়ান্টাম বিজ্ঞান সম্পর্কে জনসাধারণের অজ্ঞতা এবং উক্ত শব্দটির আলাদা একটি ব্যঞ্জনা ব্যবহার করে প্রতারণা করার পুরোনো কৌশল
চটকদার বুলি আউড়ে মানুষকে প্রতারণা করার এই কৌশল নতুন নয়মানুষের অজ্ঞতাকে পুঁজি করে যেসব প্রতারক তাদের প্রাসাদ তৈরি করছে, এগুলো তাদের নিত্যদিনকার ব্যাপার আমাদের মতো দেশে, যেখানে অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের বেড়া অনেক বড়; ভক্তি ও শক্তির যেখানে রাজকীয় যোগাযোগ, সেখানে হরহামেশা এসব ঘটনা ঘটবে এ আর নতুন কি! প্রতারকদের এসব অনুষ্ঠানে সমাজের জ্ঞানী গুণীরাও থাকবেন, এ তো আমরা হর-হামেশা দেখছিও
মানুষকে ঠকানোর জন্য আজতক যেসব পদ্ধতি মানুষ উদ্ভাবন করেছে, সম্ভবত জ্যোতিষশাস্ত্র তার শীর্ষ স্থানটি দখলে রাখতে পারেসেই অনেককাল আগে থেকে জ্যোতিষচর্চার নামে, ভাগ্য গণনার নামে মানুষকে প্রতারিত করে আসছে একদল সুযোগসন্ধানী মানুষহাল আমলে এই ধরনের ব্যবসায় নতুন মাত্রা যোগ করার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারবিশ শতকের শেষ দশকে বিজ্ঞানের বিজয় রথ পূর্ণ বেগে ছুটে চলেছেএ সময় তাই যে কোনো বিষয়ে বিজ্ঞানের কোন ব্যাপার জুড়ে দিতে পারলে তা হয় আরো জোরালো
মানুষের চাঁদে যাওয়ার বিষয়টি যে সত্য নয়, বরং তা করো কারো ধর্মীয় বিশ্বাসের বারোটা বাজানোর জন্য বিধর্মীদের ষড়যন্ত্র-এমন ধারা ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী লোকের সংখ্যাও কম নয় এদেশেযে কোনো প্রাকৃতিক দুর্ঘটনাকে কোন বিশেষ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় রত অনেক লোকএচক্রটি বেশ শক্তিশালীচানখারপুলের এলেম দ্বারা তদবির করে যে লোক, উট জবেহ করে জন্ম উসব পালনকারী কিংবা রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত মন্ত্রী যে কিনা আধ্যাত্মিক পাউডারের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়, তারা সকলেই এক সূত্রে গ্রথিতএদের সবারই উদ্দেশ্য এক, জনগণকে সত্যের স্বরূপ জানা থেকে বিরত রাখা
বিজ্ঞানের চলতি উন্নয়নের সঙ্গে নিজেদের প্রতারণা ব্যবসাকে আত্মীকরণের জন্য বিভিন্ন অপকৌশল ব্যবহৃত হয়ে আসছে অনেক দিন ধরেআলোচ্য কোয়ান্টাম মেথড-এর একটি উদাহরণ মাত্রনিয়মিত যারা হাটখোলার মোড়ের বিজ্ঞাপন নির্ভর দৈনিকটি পড়েন, তারা নিশ্চয়ই এই জাতীয় আরো প্রচারণা লক্ষ্য করে থাকবেনএ মুহূর্তে আমার আর একটি বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ছে, যার ভাষ্য ছিল অনেকটা এরূপ বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনষ্টাইন বলেছেন, পদার্থ ও শক্তি এককাজেই, আপনার শরীর আসলে শক্তিই, অর্থা কিনা আলোবিভিন্ন ধরনের পাথরের রয়েছে আলোকে প্রতিফলিত, প্রতিসরিত করার ক্ষমতাকাজেই পাথর আলোর মাধ্যমে আপনার শরীরকে প্রভাবিত করে কারণ আপনি নিজে আলোচঅতএব সঠিক পাথর ব্যবহার করে নিজের ভাগ্য গড়ে তুলুনবাক্য বিন্যাস হুবহু এমত না হলেও বক্তব্য ছিলো এমনইসাধারণভাবে, বিজ্ঞান না জানা এবং অল্প বিজ্ঞান জানা ব্যক্তিদের জন্য এটি বেশ কনভিনসিংবিজ্ঞাপনটির বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ্যণীয়ব্যবহৃত হয়েছে এমন একজন বিজ্ঞানীর নাম, যার পরিচিতি খুব ব্যাপকএখানে বিজ্ঞানের একটি তথ্য (শক্তি ও পদার্থ আসলে এক) পর্যন্ত ঠিক আছেকিন্তু এ থেকে যে সিদ্ধান্ত টানা হচ্ছে (আপনার শরীর আলো দ্বারা গঠিত) তা মোটেই সত্য নয়এভাবে সত্য থেকে মিথ্যায় উপনীত হবার যে টেকনিক উক্ত প্রতারক উদ্ভাবন করেছে তার কোন তুলনা হয় নাশক্তি ও পদার্থের অভিন্নতার তথ্যটিকে কাজে লাগিয়ে প্রতারক তার কাঙ্খিত ভবিষ্য গড়ে তুলছেন
হয়তো কিছু দিনের মধ্যে কম্পিউটারে ভাগ্য গণনাও শুরু হয়ে যাবে এদেশেফরচুন টেলারনামে এই ধরনের সফটওয়্যার এখন রয়েছেওএতে প্রথমে কোন ব্যক্তির জন্ম তারিখ (সঠিক দিন-ক্ষণ) ইনপুট হিসেবে দেয়া হয়, এর পর সফটওয়্যার উক্ত ব্যক্তির ভবিষ্য জীবন সম্পর্কে তথ্য দিতে থাকে- এর মধ্যে থাকে ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক অবস্থা, অর্থকরী, সঠিক পেশা ইত্যাদিসঠিক দিনক্ষণ দিতে না পারলেও আপত্তি নেইব্যক্তির কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বাড়তি ইনপুট হিসাবে দেয়া হয়এরপর বের হয়ে আসে ভবিষ্যতের পঞ্জিকা
এই ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে অজ্ঞ ও মূখ্য লোককে প্রতারিত করাটা সহজএমনকি চমকে দেয়া যায় অনেক শিক্ষিত লোককেও অথচ একটু ভাবলেই বোঝা যায়, কম্পিউটার প্রোগ্রাম কোনো ব্যক্তির ভবিষ্য সম্পর্কে কিছু বলতে পারে নাএ ধরনের সফটওয়্যার সম্পর্কে প্রিয় পাঠকদের যদি কোনো সংশয় থাকে, তাহলে ইনপুট হিসেবে কোন মৃত ব্যক্তির জন্মক্ষণ দিয়ে দেখতে পারেনফরচুন টেলারউক্ত ব্যক্তির চমকার ভবিষ্যবর্ণনা করতে থাকবে
বিজ্ঞানের ক্রমবর্ধমান উন্নতি ও জ্ঞানকে নিজেদের সংকীর্ণ পরিমন্ডলে ব্যবহার করার আর একটি প্রবণতার উল্লেখ সম্ভবতঃ অপ্রাসঙ্গিক হবে নাদ্বিতীয় এ দলটি, প্রথম ও সাধারণ প্রতারক দলের চেয়ে ভিন্নতর, উদ্দেশ্যে ও কাজের ধারায়সাধারণ প্রতারকদের মূল লক্ষ্য হল, নিজেদের আর্থিক ও বৈষয়িক উন্নতিআর এই দলটির পরোক্ষ উদ্দেশ্য অর্থ ও ক্ষমতা লোভ হলেও বাহ্যতঃ এরা নিজেদেরকে অন্যভাবে উপস্থাপন করেতাদের ভাব হল, মানব জাতিকে উন্নতির পথ দেখানোর কাজে তারা নিয়োজিত
এদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কতিপয় জ্ঞানপাপীনিজের আওতা বহির্ভূত ক্ষেত্রে জ্ঞান ফলানোতে আগ্রহী এসব জ্ঞানপাপীরা প্রবলভাবে দেশকে অন্ধকার ও মধ্যযুগে ফিরিয়ে নিতে চায়সাধারণভাবে, জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিজ্ঞান চেতনার ব্যাপক প্রসারই কেবল এসব প্রগতি বিরোধিতার উপযুক্ত জবাব হতে পারেকিন্তু কে তা করবে?

ইএসপি ও টেলিপ্যাথিবিজ্ঞানের নামে প্রতারণা

Standard
এক বন্ধুকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে বসেছিখাওয়া-ধাওয়া আর গল্প-সল্প সবই হচ্ছিলহঠা বিষম লাগলো আমাররীতিমতো বেকায়দায় পড়ে গেলামহাঁচির দমকে টেবিল ফেলে দেবার দশা আর পাশে বসে দিব্যি হাসছে আমার প্রিয় বন্ধুটিকৌতুহলে তাকাতেই- তোমার কথা মনে করছে, কেউহাসতে হাসতে বললোআমার এই বন্ধুটি যা বলেছে, ঠিক সেই কথাগুলো আমরা হরহামেশা শুনি; যখনই খেতে বসে কারো বিষম লাগে, তখনইকনক্লুসন হলো- কেউ যদি কাউকে স্মরণ করে এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি যদি তখন খাবার টেবিলে থাকে তখনই বিষম লাগতে পারেলাগবেই, এটা জোর দিয়ে বলা যায় নাকারণ এই ঘটনা নির্ভর করছে স্মরণকারী ও যাকে স্মরণ করা হচ্ছে এই ব্যক্তির সম্পর্কের মধ্যেএই ছোট্ট ঘটনার তাপর্যপূর্ণ দিক হলো- এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বাস করতে চাচ্ছি একজনের ভাবনাআর একজনের কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করতে পারেঅর্থা কোনো ক্ষেত্রে ভাবনাবা চিন্তার সাহায্যে অপর কোনো ব্যক্তিকে প্রভাবিত করা যায়অথবা নিজের ভাবনা তার মধ্যে সঞ্চারিত করা সম্ভব
যেমন এই গল্পটির কথা ভাবুন- কোনো ধনীর দুলালীর সন্তান হলো, যা ঐ মেয়ের অভিভাবকদের অনাকাংক্ষিতবাবা-মা প্ল্যান করে মেয়েকে বোঝালো সে একটি মৃত সন্তান প্রসব করেছেআসলে, সুস্থ সন্তানটিকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হলোকিছুদিন পর দেখা গেলো ঐ ধনীর দুলালী সব সময় কানের কাছে মাডাক শুনতে পাচ্ছেশুধু তাই নয়, দেখা গেল দিনের পর দিন ঐ ডাক স্পষ্ট ও জোরালো হয়ে উঠছেস্বভাবতই এরপর গল্পে একজন সৌম্য, দাড়িওয়ালা মনোবিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটেমনোবিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটে মনোবিজ্ঞানী আবার বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব এবং লজিক ছাড়া এন্টিলজিকের ধারে-কাছেও যান নামনোবিজ্ঞানী ঘোষণা করলেন-ঐ মেয়ের হারিয়ে যাওয়া সন্তান দূরে কোথাও থেকে টেলিপ্যাথির মাধ্যমে তার মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে এবং সফল হচ্ছেবলার ভঙ্গিমার কারণে এই ধরনের গল্প প্রায়শ: বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে এবং পাঠকদের বিশাল অংশই টেলিপ্যাথিনামক কারো কারো একটি বিশেষ ক্ষমতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যান
বেশ, টেলিপ্যাথি কি? সংক্ষেপে, এ হলো কোনো রকম মাধ্যম ছাড়া দূরবর্তী কোনো স্থান থেকে চিন্তার ট্রান্সমিশনআর টেলিপ্যাথির মূল অর্থ হলো- চাপাবাজি ও প্রতারণা টেলিপ্যাথিকে গুরুত্ব দেন মনোবিদদের একটি বিশেষ দলএনারা নিজেদের বলেন, পরামনোবিদ (প্যারা সাইকোলজিষ্ট)আসলে হলেন বিশুদ্ধ চাপাবাজ (অথবা বোকা)এই পরামনোবিদ্যা (প্যারা সাইকোলজিষ্ট) অনুসারে টেলিপ্যাথি হলো এক প্রকার অতীন্দ্রিয় অনুভূতি, একস্ট্রা সেনসরি পারসেপশন বা সংক্ষেপে ইএপসি (ঊঝচ)অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার মানে হলো প্রকৃতির সঙ্গে বোঝাপড়া করার মানুষের যে পাঁচ ইন্দ্রিয় আছে, তার বাইরের কোনো ব্যাপার- স্পাই থ্রিলারের স্পাইদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ব্রিটিশ জেমস বন্ড কিংবা আমাদের মাসুদ রানা, এদের সবারই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়খুব শার্পনতুবা ঠ্যালা সামলানো খুবই কঠিন হবে যে!
ইএসপি বোঝানোর খুব সহজ ব্যাপার আছেধরুন, আপনি কোনো পরিসংখ্যান অফিসে চাকুরী করেনআপনার কাজ হলো মানুষের বাসায় টেলিফোন করে ঐ বাসায় একটি বিশেষ সাবান ব্যবহৃত হয় কি না তা খোঁজ নেয়াআপনি টেলিফোন ডাইরেক্টরী থেকে দশটি নম্বর বাছাই করলেন এবং আশ্চর্য হয়ে জানলেন ঐ দশটি বাসাতেই আপনার কাংক্ষিত সাবানটি ব্যবহার হচ্ছেআপনি খুব অবাক হতে পারেন, আবার নাও হতে পারেন কিন্তু আমরা ইতিমধ্যেই বুঝতে পারবো আপনার ইএসপি অসাধারণপরামনোবিদদের ভাষায় চিন্তা হলো তরঙ্গযখনই কেউ চিন্তা করে তখন সে আসলে তরঙ্গতৈরি করেমানুষ ঐ তরঙ্গের গ্রাহকযন্ত্র (রিসিভার) হিসেবে কাজ করতে সক্ষমকাজেই, ফ্রিকুয়েন্সি মিললে একজনের ভাবনা আর একজনের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে ওঠেবলা বাহুল্য যে, এই ধরনের চিন্তা তরঙ্গের কোনো অস্তিত্ব আজ পর্যন্ত আবি®কৃত হয়নিহওয়ার কথাও নয়আর মানুষের মাথা যে রিসিভার নয়, তার বড় প্রমাণ আপনি নিজেকারণ, প্রতি মুহূর্তে আপনার চারপাশে বিস্তর তথ্য এদিক-সেদিক হচ্ছে, মাইক্রোওয়েভে বা বেতার তরঙ্গেএ সবের কিছুই আপনার এন্টেনা ধরতে পারছে না
ইএসপি ও টেলিপ্যাথিকে পুঁজি করে এই জগতে প্রচুর প্রতারকের আবির্ভাব ঘটেছে, ঘটছে এবং ঘটবেও যদি না সমাজ থেকে কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসকে ঝেটিয়ে দূর করা যায় টেলিপ্যাথি সম্রাট নামে বিখ্যাত এই ধরনের একজন ধুরন্ধর প্রতারকের নাম ইউরি গেলার দীর্ঘ সময় ধরে, প্রচুর বোকা মানুষকে মোহিত করে ভদ্রলোকে অনেক টাকা কামিয়েছেন জারিজুরি ফাঁস হবার পর ভদ্রলোকের ইদানিং ব্যবসা মন্দাতবে, তাকে নিয়ে গালগল্প ফাঁদবারতো লোকের অভাব নেই এদেশেবিশেষ করে হাটখোলার সাপ্তাহিক ও সেগুনবাগিচার মাসিক পত্রিকাতো পাল্লা দিয়ে লিখেই চলছে
আপনার আশপাশে যে সব টেলিপ্যাথিক ক্ষমতার অধিকারী পীর, ফকির ও সাধুবাজীরা আছেন তাদেরকে দুটো পরীক্ষা করে দেখতে পারেনপ্রথমতঃ পকেট থেকে একটি টাকার নোট বের করে সেদিকে তাকিয়ে থাকুনখেয়াল রাখবেন টেলিপ্যাথিক বাবা যেন সেটি দেখতে না পায় এবার বাবাজীকে নোটের নম্বর জিজ্ঞেস করুনঅথবা বাবাজির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বাবাজীকে একটি কষে গালি দিনতারপরে জিজ্ঞেস করুন আপনার ভাবনা বাবাজী ধরতে পেরেছে কি না
পুনশ্চঃ যে বিষম খাওয়া নিয়ে এই লেখার শুরু সেই বিষম খাওয়ার মূল ব্যাপারটি, পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিখাদ্য বা পানি উদরে যাবার সময় অন্ননালীর পরিবর্তে যদি শ্বাসনালীতে ঢুকে পড়ে তাহলে শ্বাস রোধকারী একটা অবস্থা সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবর্তী ক্রিয়া হিসেবে হিক্কা, হাঁচির মাধ্যমে দুরবস্থার নিরসন হয়

বাণমারা কিংবা তাবিজকরা, প্রতারকের রমরমা

Standard
কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি মিলনায়তনের একটি অনুষ্ঠানের খবর আমরা জানতে পারি পরদিন প্রকাশিত দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের পরিবেশিত সংবাদ থেকেএর শিরোনাম ছিল আচ্ছন্ন তন্দ্রায় নাকডাকা প্রশান্তিখবরের অংশ বিশেষ- ভার্সিটির ছাত্র, শিক্ষক সরকারী অফিসার ও উসুক তরুনেরা মহাজাতকের প্রশান্তিকরণ ক্যাসেটের সুরময় অনুনাদে দুই দুইবার আচ্ছন্ন তন্দ্রায় নাকও ডাকিতে শুরু করেন। … জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর নুরুল ইসলাম এটিকে কেবল উকণ্ঠা নয়, ৪০ ভাগ শারীরিক জরামুক্তির সংগ্রাম হিসেবেও মূল্য দিয়াছেনউক্ত সভার প্রধান বক্তা শহীদ আল বোখারী (মহাজাতক) যেসব জ্ঞানগর্ভ উপদেশ খয়রাত করেন তার মূল কথা হলো- একমাত্র আহাম্মকের ভবিষ্য ভাগ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ঐ দিনের ঐ দৈনিকেরই প্রথম পাতায় একটি বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছেবিজ্ঞাপনটির অংশবিশেষ- নিজেই নিজের ভাগ্য নিয়ন্তা হোনমাত্র ২৮ ঘণ্টায় ব্যর্থতা থেকে সাফল্যের পথে যাত্রা শুরু করুনমন নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এখন বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করছেবরেণ্য ভবিষদ্রষ্টা ও যোগ-গুরু মহাজাতক এখন শেখাচ্ছেন মন নিয়ন্ত্রণের সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কোয়ান্টাম মেথড…
বিজ্ঞাপনের ভাষ্য অনুযায়ী এর মাধ্যমে ছোট বড় নারী-পুরুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা অর্জন থেকে শুরু করে অর্থ-বিত্ত, ব্যবসা, পদোন্নতি, খ্যাতি ইত্যাদি সবই পাওয়া যাবেকোর্সটি হবে ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলেবিজ্ঞাপনে অবশ্য কোর্স ফি উল্লেখ করা হয়নিতাহলে জানা যেত, আহাম্মকদের ঘাড়ে মহাজাতক কত টাকার কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছেনমন নিয়ন্ত্রণের বৈজ্ঞানিকপদ্ধতি বলে আসলে কিছু নেইতদুপরি- সেটা কোয়ান্টামহবার কোনো কারণও নেইপদার্থবিজ্ঞানের যে শাখাটি কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা বা কোয়ান্টাম মেকানিক্স নামে পরিচিত, তার সঙ্গে এই কোর্সের কোন সম্পর্ক নেইআছে প্রতারণার সম্পর্ককোয়ান্টাম বিজ্ঞান সম্পর্কে জনসাধারণের অজ্ঞতা এবং উক্ত শব্দটির আলাদা একটি ব্যঞ্জনা ব্যবহার করে প্রতারণা করার পুরোনো কৌশল
চটকদার বুলি আউড়ে মানুষকে প্রতারণা করার এই কৌশল নতুন নয়মানুষের অজ্ঞতাকে পুঁজি করে যেসব প্রতারক তাদের প্রাসাদ তৈরি করছে, এগুলো তাদের নিত্যদিনকার ব্যাপার আমাদের মতো দেশে, যেখানে অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের বেড়া অনেক বড়; ভক্তি ও শক্তির যেখানে রাজকীয় যোগাযোগ, সেখানে হরহামেশা এসব ঘটনা ঘটবে এ আর নতুন কি! প্রতারকদের এসব অনুষ্ঠানে সমাজের জ্ঞানী গুণীরাও থাকবেন, এ তো আমরা হর-হামেশা দেখছিও
মানুষকে ঠকানোর জন্য আজতক যেসব পদ্ধতি মানুষ উদ্ভাবন করেছে, সম্ভবত জ্যোতিষশাস্ত্র তার শীর্ষ স্থানটি দখলে রাখতে পারেসেই অনেককাল আগে থেকে জ্যোতিষচর্চার নামে, ভাগ্য গণনার নামে মানুষকে প্রতারিত করে আসছে একদল সুযোগসন্ধানী মানুষহাল আমলে এই ধরনের ব্যবসায় নতুন মাত্রা যোগ করার জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারবিশ শতকের শেষ দশকে বিজ্ঞানের বিজয় রথ পূর্ণ বেগে ছুটে চলেছেএ সময় তাই যে কোনো বিষয়ে বিজ্ঞানের কোন ব্যাপার জুড়ে দিতে পারলে তা হয় আরো জোরালো
মানুষের চাঁদে যাওয়ার বিষয়টি যে সত্য নয়, বরং তা করো কারো ধর্মীয় বিশ্বাসের বারোটা বাজানোর জন্য বিধর্মীদের ষড়যন্ত্র-এমন ধারা ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী লোকের সংখ্যাও কম নয় এদেশেযে কোনো প্রাকৃতিক দুর্ঘটনাকে কোন বিশেষ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় রত অনেক লোকএচক্রটি বেশ শক্তিশালীচানখারপুলের এলেম দ্বারা তদবির করে যে লোক, উট জবেহ করে জন্ম উসব পালনকারী কিংবা রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত মন্ত্রী যে কিনা আধ্যাত্মিক পাউডারের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়, তারা সকলেই এক সূত্রে গ্রথিতএদের সবারই উদ্দেশ্য এক, জনগণকে সত্যের স্বরূপ জানা থেকে বিরত রাখা
বিজ্ঞানের চলতি উন্নয়নের সঙ্গে নিজেদের প্রতারণা ব্যবসাকে আত্মীকরণের জন্য বিভিন্ন অপকৌশল ব্যবহৃত হয়ে আসছে অনেক দিন ধরেআলোচ্য কোয়ান্টাম মেথড-এর একটি উদাহরণ মাত্রনিয়মিত যারা হাটখোলার মোড়ের বিজ্ঞাপন নির্ভর দৈনিকটি পড়েন, তারা নিশ্চয়ই এই জাতীয় আরো প্রচারণা লক্ষ্য করে থাকবেনএ মুহূর্তে আমার আর একটি বিজ্ঞাপনের কথা মনে পড়ছে, যার ভাষ্য ছিল অনেকটা এরূপ বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনষ্টাইন বলেছেন, পদার্থ ও শক্তি এককাজেই, আপনার শরীর আসলে শক্তিই, অর্থা কিনা আলোবিভিন্ন ধরনের পাথরের রয়েছে আলোকে প্রতিফলিত, প্রতিসরিত করার ক্ষমতাকাজেই পাথর আলোর মাধ্যমে আপনার শরীরকে প্রভাবিত করে কারণ আপনি নিজে আলোচঅতএব সঠিক পাথর ব্যবহার করে নিজের ভাগ্য গড়ে তুলুনবাক্য বিন্যাস হুবহু এমত না হলেও বক্তব্য ছিলো এমনইসাধারণভাবে, বিজ্ঞান না জানা এবং অল্প বিজ্ঞান জানা ব্যক্তিদের জন্য এটি বেশ কনভিনসিংবিজ্ঞাপনটির বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ্যণীয়ব্যবহৃত হয়েছে এমন একজন বিজ্ঞানীর নাম, যার পরিচিতি খুব ব্যাপকএখানে বিজ্ঞানের একটি তথ্য (শক্তি ও পদার্থ আসলে এক) পর্যন্ত ঠিক আছেকিন্তু এ থেকে যে সিদ্ধান্ত টানা হচ্ছে (আপনার শরীর আলো দ্বারা গঠিত) তা মোটেই সত্য নয়এভাবে সত্য থেকে মিথ্যায় উপনীত হবার যে টেকনিক উক্ত প্রতারক উদ্ভাবন করেছে তার কোন তুলনা হয় নাশক্তি ও পদার্থের অভিন্নতার তথ্যটিকে কাজে লাগিয়ে প্রতারক তার কাঙ্খিত ভবিষ্য গড়ে তুলছেন
হয়তো কিছু দিনের মধ্যে কম্পিউটারে ভাগ্য গণনাও শুরু হয়ে যাবে এদেশেফরচুন টেলারনামে এই ধরনের সফটওয়্যার এখন রয়েছেওএতে প্রথমে কোন ব্যক্তির জন্ম তারিখ (সঠিক দিন-ক্ষণ) ইনপুট হিসেবে দেয়া হয়, এর পর সফটওয়্যার উক্ত ব্যক্তির ভবিষ্য জীবন সম্পর্কে তথ্য দিতে থাকে- এর মধ্যে থাকে ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক অবস্থা, অর্থকরী, সঠিক পেশা ইত্যাদিসঠিক দিনক্ষণ দিতে না পারলেও আপত্তি নেইব্যক্তির কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বাড়তি ইনপুট হিসাবে দেয়া হয়এরপর বের হয়ে আসে ভবিষ্যতের পঞ্জিকা
এই ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে অজ্ঞ ও মূখ্য লোককে প্রতারিত করাটা সহজএমনকি চমকে দেয়া যায় অনেক শিক্ষিত লোককেও অথচ একটু ভাবলেই বোঝা যায়, কম্পিউটার প্রোগ্রাম কোনো ব্যক্তির ভবিষ্য সম্পর্কে কিছু বলতে পারে নাএ ধরনের সফটওয়্যার সম্পর্কে প্রিয় পাঠকদের যদি কোনো সংশয় থাকে, তাহলে ইনপুট হিসেবে কোন মৃত ব্যক্তির জন্মক্ষণ দিয়ে দেখতে পারেনফরচুন টেলারউক্ত ব্যক্তির চমকার ভবিষ্যবর্ণনা করতে থাকবে
বিজ্ঞানের ক্রমবর্ধমান উন্নতি ও জ্ঞানকে নিজেদের সংকীর্ণ পরিমন্ডলে ব্যবহার করার আর একটি প্রবণতার উল্লেখ সম্ভবতঃ অপ্রাসঙ্গিক হবে নাদ্বিতীয় এ দলটি, প্রথম ও সাধারণ প্রতারক দলের চেয়ে ভিন্নতর, উদ্দেশ্যে ও কাজের ধারায়সাধারণ প্রতারকদের মূল লক্ষ্য হল, নিজেদের আর্থিক ও বৈষয়িক উন্নতিআর এই দলটির পরোক্ষ উদ্দেশ্য অর্থ ও ক্ষমতা লোভ হলেও বাহ্যতঃ এরা নিজেদেরকে অন্যভাবে উপস্থাপন করেতাদের ভাব হল, মানব জাতিকে উন্নতির পথ দেখানোর কাজে তারা নিয়োজিত
এদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কতিপয় জ্ঞানপাপীনিজের আওতা বহির্ভূত ক্ষেত্রে জ্ঞান ফলানোতে আগ্রহী এসব জ্ঞানপাপীরা প্রবলভাবে দেশকে অন্ধকার ও মধ্যযুগে ফিরিয়ে নিতে চায়সাধারণভাবে, জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিজ্ঞান চেতনার ব্যাপক প্রসারই কেবল এসব প্রগতি বিরোধিতার উপযুক্ত জবাব হতে পারেকিন্তু কে তা করবে?

কাজলের টিপে ‘নজর’ কাটানো

Standard
ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছি। সঙ্গে এক ভাবী ও ভাইঝি। মাঝপথে হঠাৎ খেয়াল করলাম, ভাইঝির কপালে এক মস্ত বড় টিপ। ৭/৮ মাসের শিশু হলেও, মেয়েতো- তাই প্রথমে ততটা অবাক হইনি। কিন্তু ভাল করে লক্ষ্য করতেই গলদটা ধরতে পারলাম। না, কপালের মাঝখানে নয়, ভাইঝির কপালের এক পামে অনেকটা থ্যাবড়ানো ভঙ্গিতে দেয়া হয়েছে। কালো কাজলের টিপ। সৌন্দর্য বর্ধন নিশ্চয়ই নয়। মনে পড়লো, অল্প বয়স্ক শিমুদের কপালে এই ধরনের টিপ দেখা যায়ই। সৌন্দর্য নয়, তাহলে? ভাবীর কাছ থেকে উত্তরটা পেয়ে গেলাম। ঐ কালো কাজল টিপের মাহাত্ম সৌন্দর্য বৃদ্ধি নয়-বরং ‘নজর’ কাটানো! কার নজর? কিসের নজর? প্রথমত হিংসুটে ঈর্ষাপরায়ণ মানুষের নজর। স্বাভাবিকভাবেই শিমুদের সৌন্দর্যভাবটা থাকে প্রকাশিত। ঈর্ষাপরায়ণ ব্যক্তিদের কাছে শিশুর সৌন্দর্য পছন্দ নাও হতে পারে। এতে সম্ভাবনা থাকে ‘নজর’ কিংবা ‘কুনজর’ লাগার। এর ফলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে শিমুটি। যেমন- শিশুটির হাম হতে পারে, হতে পারে ভীষণ জ্বর কিংবা আরো কিছু।
হিংসুটে কিংবা বদমতলবী ব্যক্তিদের নজর লাগবে তাও নয়। এমনকি, শিশুর কোন শুভার্থীও যদি হঠাৎ বলে ফেলে- ‘এমা, এষে দিখছি স্বর্গের পরী’, কিংবা ‘তোমার ছেলেতো বড় হয়ে লেডি কিলার হবে’- তাহলেও কিন্তু এমন সর্বনাশ হতে পারে। তবে, সেসব ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ‘ব্যবস্থা’ নেয়া হয়-ঐ ব্যক্তি শিশুটির মাথা ছুয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে কিংবা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে। মানুষ ছাড়াও অন্যকিছু, রাতের বেলায় যাদের নাম নেয়া যায় না কিংবা যাদের কোন ছায়া পড়ে না তাদেরও নজর পড়তে পারে শিশুর প্রতি। কাজেই সময় থাকতেই কাজল টিপ।
কোথা থেকে এলো?
সভ্যতার বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষ অনেক কুসংস্কার ঝেড়ে ফেলেছে। কিন্তু একই সঙ্গে এক দল মানুষ অস্বস্তিহীন আজগুবী আকাশীর তত্ত্ব কাহিনীর অবতারণাও করেছে। যার ফলস্বরূপ নিত্যনতুন কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস। অন্ধকারের যেসব জীবের/বস্তুর কল্পনা মানুষ করে তার মধ্যে অপদেবতা হলো অন্যতম। বিশ্বের অন্যতম ফন্দিবাজ, প্রতারক সুইজারল্যান্ডের এরিক ফন দানিকেন। ভদ্রলোক নিশ্চিতভাবে বলেন, দেবতারা অন্যগ্রহের বুদ্ধিমান জীব। এহেন দানিকেনও কিন্তু অপদেবতাদের ব্যাপারে কিছু বলেননি। তাই এইসব অবদেবতাদের কাজ কি? না, তাদের ঘর-সংসার নেই, শুধু মানুষের পেছনে লেগে থাকা। তবে এক্ষেত্রে কিছু বাছবিচার আছে। অপদেবতা হলেও তাদের সৌন্দর্য জ্ঞান বেশি। কেননা, দেখা যায় উঠতি বয়সের সুন্দরী মেয়েদের প্রতি এসব অপদেবতাদের পক্ষপাত বেশি।
তবে, বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের সমস্যা ভিন্ন। বয়স্করা চেষ্টা করলে অপদেবতাদের নজর এড়াতে পারে (যেমন সন্ধ্যাবেলায় এলোচুলে বাঁশবনের পাশ দিয়ে না যাওয়া ইত্যাদি)। কিন্তু শিশুরা তা পারে না। সে কারণে শিশুর অভিভাবকদের মহৎ (?) দায়িত্ব হচ্ছে তার সুন্দর শিশুটির ‘কুৎসিৎ’ বানিয়ে রাখা যাতে সে বাড়তি মনোযোগ না পায়।
এই অভাগা দেশে এখনও মৃত্যুর জন্য ‘যম রাজা’কে দায়ী করা হয়। যে দম্পতির সন্তান বাঁচেনা, তারা শেষের শিশুটির নাম রাখে ‘পচা’, যাতে যমের তাকে পছন্দ না হয়। এভাবে যমরাজাকে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা হয়ে থাকে।
আসলে কি? ঘোড়ার ডিম
যেভাবেই দেখুন না কেন, একটু চিন্তা করলেই কিন্তু বুঝতে পারা যায়- মানুষ কিংবা অপদেবতা, যাই হোক কারোই ‘নজর দেয়ার’ মতো কোন ক্ষমতা নাই। ইচ্ছা পোষণ করে, কাউকে মুখে অভিশাপ দিয়ে, আর যাই হোক কোন জীবিত প্রাণীর শারীরিক ক্ষতি করা যায় না। শিশুদেরতো নয়ই। অভিশাপ কিংবা নজর দেবার সাইকোলজিক্যাল কোন ক্ষতিও তার হয় না। যেসব দম্পতির সন্তান ঠিকমতো বাঁচে না, তাদের বরং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। ‘পচা’ নাম রেখে ছেলেকে বাঁচানো যায় না। তার চেয়ে সন্তান ধারণকালের মধ্যে যথেষ্ট বিরতি, মা ও শিশুর জন্যে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবস্থা নিশ্চিত করলেই ঘন ঘন সন্তানের মৃত্যু ঠেকানো যাবে।
হবেটা কি?
মুশকিল হচ্ছে এই অভাগা দেশে আমার ভাবীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ভাবীর শ্বশুর একজন এমবিবিএস ডাক্তার। সকাল বেলায় নাতনীর কপালে কাজল টিপ না থাকলে পাড়া মাথায় তোলেন। অর্থাৎ জীবনলব্ধ অভিজ্ঞতা ও ডাক্তারীবিদ্যা মার খেয়ে যাচ্ছে স্রেফ কুসংস্কারের কাছে। শিক্ষিত সমাজেই যদি এই হাল হয়, তাহলে এই অবস্থা থেকে দেশের মুক্তি কিভাবে সম্ভব হবে?

কিভবে অটোরান ভাইরাস কে ডিলিট করা যায়

Standard
undefined
খুতবা: মাঝে মাঝেই একটি সাধারন সমস্যা দেখা যায় : Hidden ফাইলফোল্ডারগুলো আনহাইড করলেও সেগুলো শো করে না বিশেষ করে Pen-drive বা কম্ফূর ড্রাইভগুলোতে Pull-down মেনুতে Open কমান্ডটি না দেখিয়ে যখন কিছু অর্থহীন সংকেত দেখায় অথবা Double-click করলে সরাসরি না খুলে Open with খোলেতখনই সমস্যাটি হয় অ্যাকটিভ ভাইরাস বন্ধ করতে হলে আগে দুইটি সম্বন্ধে ধারনা থাকা দরকার

দ্বীনি এলেম: এটি Autorun.inf ফাইলের কাজ ধরা যাক, কোন ড্রাইভের ভেতর একটি Autorun.inf ফাইল একটি programme (smss.exe) আছে (এই ফাইলটি বিভিন্ন সফটওয়্যার (এক্সপি, ভিসতা, ফ্ল্যাশ, নিরো, নরটন) বা গেমসের সিডির ভেতর পাওয়া যাবে)

undefined

ডাবলক্লিক করে এটি খুলুন দেখা যাক অটোরানের কোডগুলো কিভাবে কাজ করে

[autorun]
open=smss.exe

shell\Open\Command=smss.exe
shell\Open\Default=1

দ্বিতীয় লাইনে Open কমান্ডে ক্লিক করলে যেন smss.exe নামক প্রোগ্রামটি চালু হয় তার নির্দেশ আছে তৃতীয় লাইনে Open যাতে Pull-down মেনুতে সর্বপ্রথমে থাকে (অর্থাত Default, যাতে ইউজার সন্দেহ না করে) তার নির্দেশ আছে অনেক সময় দেখবেন নিচের লাইনগুলোও আছে

shell\Explore\Command=smss.exe
shell\Autoplay\Command=smss.exe

Explore বা Autoplay অপশনে ক্লিক করলেও যাতে ভাইরাসটি চালু হয় তা চার পাঁচ নম্বর লাইনে নিশ্চিত করা হয়েছে এর ফলে মেনুটি নিচের মত হবে দেখতে

অটোপ্লে ফিচারটি Group Policy থেকে যদি বন্ধ করা না হয় তবে এই অপশনগুলোতে ক্লিক না করলেও ভাইরাসটি চালু হয়ে যাবে Autoplay বন্ধ করার জন্য Group Policy খুলে নিম্নোক্ত পথ সতর্কতার সাথে অনুসরণ করুন (Run চালু করে gpedit.msc লিখে Enter প্রেস করুন)

আমার প্রিয় পোস্টa
.
undefined
ছাওয়াল জওয়াব : অদৃশ্য জগত

                 
User Configuration\ Administrative Templates \ System \ Turn off Autoplay

আপনি ইহার প্রপার্টিজে গিয়া Enabled করিয়া সকল ড্রাইভের জন্য Select করে দিন এবার অযু দিন (Refresh)

আর নিশ্ছিদ্র সুরক্ষার জন্য যদি Shell Hardware Detection নামক Service বন্ধ করে দেন, তবে এক্সপির Normal (Default) অপশনগুলো আসবে, সেক্ষেত্রে অটোরানের কোন প্রভাব থাকবে না

(আগের পোস্ট দেখুন)

ছাওয়াল : হুজুর ড্রাইভের সুরত কিরূপে পাল্টানো যায়?

জওয়াব : এক্সপিতে ড্রাইভের Icon পাল্টানোর কোন অপশন নেই তবে অটোরান দিয়ে পেনড্রাইভ বা ড্রাইভের আইকন পাল্টানো যায় জন্য অটোরান ফাইলটির ভিতর নিচের কোডটি পেস্ট করুন (ধরুন আইকনটির নাম bubble.ico)

[autorun]
icon = bubble.ico

undefined

এখন পছন্দের আইকনটি কপিপেস্ট করে দিন ড্রাইভটিতে এবং সমান চিহ্নের পরে আইকনটির পুরো নাম (Extension সহ) দিয়ে দিন অন্য কোন ফোল্ডারে থাকলে সরাসরি address দিয়ে দিন কম্ফূর ড্রাইভের ক্ষেত্রে গোছল (log off & log on) (না হলে Restart) এবং Removable ড্রাইভের ক্ষেত্রে খুলে আবার লাগালেই চলবে

undefined

কম্ফূর ড্রাইভের Icon- এই পদ্ধতিতে পাল্টানো যায়

undefined

তবে Shell Hardware Detection যদি বন্ধ থাকে তবে অটোরান ফিচারটির আইকন চেইঞ্জ বা এক্সিকিউটেবল ফাইল চালু হবার কমান্ড কাজ করবে না

ছাওয়াল : কিন্তু হুজুর, অটোরান সম্বন্ধে এতকিছু জানিবার নেকী কতটুকু?

জওয়াব: অধিকাংশ শয়তান নিজের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি ড্রাইভের রুটে একটি করে অটোরান ফাইল এবং হুবহু নিজের একটি image file কপি করে ফলে ভাইরাসটি যদি কোনক্রমে বন্ধ হলেও ইউজার যখন Double-click করে যেকোন ড্রাইভ খোলে তখনই ভাইরাসটি আবার চালু হয়ে যায় বুঝতেই পারছেন এই এলেমের নেকী মীযানে মাপা যাবে না

Anti-virus সফটওয়্যারগুলো তাদের ডেইটাবেজে সর্বশেষ আপডেইটানুযায়ী যেসকল ভাইরাসের লিস্ট থাকে সেগুলোকে চিহ্নিত করে delete করে দেয় কিন্তু অটোরান ফাইলটিকে অনেক সময় এগুলো ডিলিট করে না কারণ অটোরান কোন ভাইরাস নয়, এটি একটি সাধারণ text file বিশেষ কারণে User নিজেও অটোরান ফাইল ক্রিয়েট করে রাখতে পারে (যেমন আইকন চেইঞ্জ করার জন্য)

সমস্যা হয় তখন যখন ভাইরাসটি ডিলিট হয়ে যায়, কিন্তু ভাইরাস কর্তৃক ক্রিয়েটেড অটোরান থেকে যায় ফলে আপনি ড্রাইভে ডাবলক্লিক করলে ভাইরাসটি চালু হবার কমান্ডটি execute করে, কিন্তু ভাইরাসটি যেহেতু এতক্ষণে দোযখে চলে গিয়েছে (অ্যান্টিভাইরাস কর্তৃক) কারণে Open with খোলে অনেকেই সমস্যায় পড়ে ড্রাইভটি Format দেয়

ছাওয়াল : আফসোস! যেখানে অটোরান delete করিয়া দিলেই সমস্যা সমাধান হইয়া যাইত?

জওয়াব : বয়ানের মাঝে বাত রাখিবেন না শয়তান জানে আপনি অটোরান ডিলিট করবেন সুতরাং সে অটোরান ফাইলটিকে Supper Hidden করে রাখে

কম্ফূর অধিকাংশই System ফাইলই যাতে কম বেইমানদ্বার বান্দাগণের হাতে পড়ে বিকৃত বা বিপথগামী হয়ে রিসাইকল বিনে না চলে যায় এজন্য সুপার হিডেন নামক অদৃশ্য জগতে এরা এবাদাত করে দিব্যচোখে এই অদৃশ্য জগত দেখতে হলে সুপার হিডেনের চেকমার্ক উঠাতে হবে ফোল্ডারে অপশনে যেতে হবে

Hide protected operating system files (Recommended)-এর চেকমার্ক উঠিয়ে দিন (অদৃশ্য জগতে ঢোকার পূর্বে অনুমতির জন্য ইয়েস বাটনে ক্লিক করুন) এবং Show hidden files and folders – ক্লিক করে Apply দিন

undefined

এবার Foler ক্লিক করে Tree View দিয়ে বামপাশ থেকে প্রতিটা ড্রাইভে গিয়ে Autorun.inf ফাইলটি ডিলিট করে দিন Open with বা কমান্ড বদলে যাওয়া জাতীয় যেকোন সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে

ছাওয়াল : আলহামদুলিল্লাহ্, বড়ই উপকৃত হইলাম কিন্তু হুজুর, শয়তান নিশ্চয় ইহাও জানে যে ইউজার এই পদ্ধতিতে কাজ করিবার কৌশেশ ফরমাইবে?

জওয়াব: সুবহানাল্লাহ্! ছহিহ ডিডাকশন বুঝতেই পারছেন তাহলে অদৃশ্য জগতে যাতে আপনি প্রবেশ না করিতে পারেন জন্য সে ইতিমধ্যেই Folder opetions…-টি গায়েবী জগতে পাঠিয়ে দেবে

ছাওয়াল : ফোল্ডার অপশন গায়েবী জগতে গেল কি করিতে হইবে সেই এলেম আছে হুজুর (ছাওয়াল জওয়াব )

জওয়াব : তাহলে এবার জানা দরকার গায়েবী জগত থেকে ফোল্ডার অপশন দৃশ্যমান জগতে আসার পরেও বা ফোল্ডার অপশন যদি অক্ষতও থাকে এরপর বয়ান মোতাবেক কাজ করার পরেও ফাইলগুলো গোপন থাকার গোপন মাজেজা

ফোল্ডার অপশনে View- আন্ডারে যে সমস্ত Options থাকে সেগুলোর Settings পাবেন রেজিস্ট্রিতে নিম্নোক্ত ঠিকানায়

HKEY_LOCAL_MACHINE \ SOFTWARE \ Microsof \ Windows \ CurrentVersion \ Explorer \ Advanced \ Folder

undefined

ছাওয়াল : মালুম হইতেছে, হুজুর বলিতে চাহিতেছেন, যাতে চেকমার্ক উঠাইয়া হিডেন ফাইল আনহাইড করিতে না পারি তাহার নিমিত্ত শয়তান উক্তি Settings-গুলোর বিকৃতিসাধন করিবে?

জওয়াব : লা রাইবা ফিইহি Folder-এর আন্ডারে Hidden নামক ( নম্বর) কীটি দেখুন Hidden এর আন্ডারে দুটো কী থাকেNOHIDDEN এবং SHOWALL দুটি কীর আন্ডারে CheckedValue নামে দুটি Dword ভ্যালু আছে

ভাইরাসগুলো সাধারণত ভ্যালুদুটোর মান 0 বানিয়ে দেয় Hidden ফাইলগুলো দেখার জন্য ভ্যালুগুলোর উপর ডাবলক্লিক করে এদের মান (ValueData) যথাক্রমে 2 (NOHIDDEN) এবং 1 (SHOWALL) করে দিতে হবে ( সময় Base হেক্সাডেসিমাল সিলেক্ট থাকতে হবে)

(বেশ কিছুদিন আগে একজনের পিসি এক্সরসিজম করতে গিয়ে দেখি সব ঠিক করার পরও Hidden ফাইলফোল্ডার আনহিডেন হচ্ছে না প্রায় দশ মিনিট পর যখন হাল ছেড়ে দিলাম তখন এক পর্যায়ে রেজিস্ট্রিতে গিয়ে ভালো করে CheckedValue-টি খেয়াল করতেই দেখলাম আসলে ভ্যালুটি Dword নয়, বরং একটি String ভ্যালু মানুষের সাইকোলজি এমন যে, যে জিনিসটি সবসময় দেখতে দেখতে অভ্যস্ত সেটিতে ছোটখাটো গড়মিল চোখে পড়ে না ভাইরাস যারা বানায় তাদের এই সূক্ষ্ণ চিন্তাধারা দেখে মনটাই খারাপ হয়ে গেল ইউজারকে ঘোল খাওয়ানোর জন্য এরা দিনরাত পরিশ্রম করে এসবের পিছনে…)

ছাওয়াল : হুজুর, এইসকল দিওয়ার্ডস্ট্রং ভালুর এলেমের চোটে বান্দার মেমোরি কার্ডে গড়বড় দেখা দিতেছে রেজিস্ট্রি যদি ভাইরাস কর্তৃক বন্ধ থাকে তখন?

জওয়াব : রেজিস্ট্রি দিসেবলদ থাকিলে তা এনেবলদ কিভাবে করিবেন সেটি বিস্তারিত পূর্বেই ফরমাইয়াছি আর রেজিস্ট্রি না খুলেও নিচের কমান্ড প্রম্পট খুলে নিচের দুয়া copy-paste করলেই CheckedValue দুটোর মান change করতে পারবেন

reg add HKLM\software\microsoft\windows\currentversion\explorer\advanced\folder\hidden\nohidden /v checkedvalue /t reg_dword /d 2 /f
reg add HKLM\software\microsoft\windows\currentversion\explorer\advanced\folder\hidden\showall /v checkedvalue /t reg_dword /d 1 /f

(Paste কমান্ডটি ctrl + V না চেপে মাউস দিয়ে রাইটক্লিক করে দিন অটোমেটিক্যাল্লি কমান্ডদুটো এক্সিকিউট করবে)

ভাইরাস দ্বারা সেটিংস নষ্ট হওয়া খুবই কমন একটি ঘটনা আপনার কম্ফূতে যদি এই মূহুর্তে এইরকম কোন সমস্যা না থাকে তবে এখুনি Folder কীটির সমস্ত সেটিংস Save করে রাখুন ফোল্ডারে রাইটক্লিক করুন এখান থেকে Explort সিলেক্ট করুন (ফোল্ডার কীটি বন্ধ করে অর্থাত বামপাশে প্লাস (+) চিহ্ন থাকা অবস্থায় এক্সপোর্ট করুন) যেকোন ফোল্ডারে এবার যেকোন একটি নাম দিয়ে Folder কীটির বর্তমান সেটিংস সেইভ করুন পরবর্তীতে জাতীয় সমস্যা হলেই ওই ফাইলটি ডাবলক্লিক করে ওপেন করে ইয়েস বাটনে ক্লিক করলেই রেজিস্ট্রিতে পুনরায় আগের সেটিংসগুলো Add হয়ে যাবে

ছাওয়াল : বলিতে চাহিতেছেন প্রাথমিক ধারনা থাকিলে বিভিন্ন পথেই সমস্যা সমাধান করা যায়কিন্তু হুজুর সরল পথ কোনটি?

জওয়াব : জানা কথা, শয়তান কৌশেশ করিবে সম্ভাব্য সকল পথ বন্ধ রাখিবার যাতে অটোরান ডিলিট না হইয়া যায় সে হয়তো কমান্ড প্রম্পটও দিসেবলদ করিয়া রাখিতে পারে বুঝিতেই পারিতেছেন সকল এলেমই রাখা প্রয়োজন এমনও হইতে পারে সে আরো উন্নততর পদক্ষেপ নিতে পারে (আপাতত এইগুলোই যথেষ্ট)

এক্ষেত্রে আমার মতে সবচেয়ে সহজ পন্থা হইল রান খুলিয়া সেখানে অটোরান ফাইলটিকে গায়েবী জগত হইতে দৃশমান জগতে আনিবার জন্য নিম্নোক্ত দুয়া পড়া :

attirb c:\autorun.inf –H –S

এখন c: ড্রাইভে গেলেই দেখবেন অটোরান ফাইলটি শো করছে এভাবে আবার একই কমান্ডটিতে শুধু c এর পরিবর্তে d লিখে এন্টার দিন এবার d: ড্রাইভের Autorun ফাইলটি শো করবে (যদি ফাইলটি থাকে) আপনি যখন নিশ্চিত ফাইলটি আছে তখন পদ্ধতিতে কাজ করবেন কোন ড্রাইভে ফাইলটি আছে কিনা বুঝতে হলে রানে নিচের কমান্ডটি লিখে এন্টার দিন ফাইলটি না থাকলে মেসেজ আসবে নামে কোন ফাইল নেই, থাকলে সরাসরি খুলে যাবে

c:\autorun.inf

ছাওয়াল : হুজুর , এত সহজ পন্থা ছাড়িয়া অহেতুক অন্যান্য পথে ঘোরাইলেন কেন?

জওয়াব : কারণ, ভাইরাস শুধুমাত্র অটোরানকে এবং তার ইমেজ ফাইলটিকে প্রতিটি ড্রাইভে নিরাপদে রাখার জন্যই ফোল্ডার অপশন গায়েবী জগতে পাঠিয়ে দেয়, কিংবা ফোল্ডার অপশনের ক্ষতি না করলেও রেজিস্ট্রিতে সেটিংস নষ্ট করে দেয় তাই পরবর্তীতে হিডেন ফাইলগুলো যাতে দেখতে পারেন, বা এরকম সমস্যায় পড়লে কি করতে হবে তার সমাধান একই সাথে পেয়ে গেলেন

মূলত অটোরানকে অক্ষত রাখার জন্যই ভাইরাসনির্মাতার এত কাহিনী, আর পুরো জিনিসের খোলাছা তাতপর্য বোঝানোর জন্যই বয়ান এর মধ্যে চিন্তাশীল ব্যক্তিদের জন্য ভাবনার প্রচুর নিদর্শন রহিয়াছে


লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কিওয়ার্ড): অটোরানভাইরাসকম্পিউটারহিডেন ফাইল ;
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :০৯ | বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকারীর
undefinedundefinedundefinedundefined
২৪ টি মন্তব্য
৪১৫ বার পঠিত,
Send to your friendPrint
পোস্টটি ১৬ জনের ভাল লেগেছে

এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান    বন্ধ করুন

Top of Form

এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান    বন্ধ করুন
আপনার নিজস্ব মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করতে চাইলে এখানেক্লিক করুন
আপনার নাম :
আপনার মেইল
আপনার বন্ধুদের ইমেইল
মেসেজ (নীচের মেসেজটি আপনার ইচ্ছেমত পরিবর্তন করুন
hi, i have been reading a wonderful post in http://www.somewhereinblog.net and would like to share it with you. Here is the post link http://www.somewhereinblog.net//blog/biplob007/28913862 , please visit the link and rate it if you like. 🙂
নিজেকেও একটি কপি পাঠান

Bottom of Form
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :১০
undefinedওয়ার হিরো বলেছেন: ho, thik ase
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :১৬
লেখক বলেছেন: এত পরিশ্রম করলাম, খালি ঠিক বলে চলে যাওয়াটা কি ঠিক হচ্ছে…!!!!!
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :২৯
টেকনো বলেছেন: হুজুরের ওয়াজ অনেক ভাল লাগছে
কষ্ট করে ওয়াজ করার জন্য হুজুরকে অনেক ধন্যবাদ জানাই
পরবর্তী ওয়াজ এর জন্য অপেক্ষাতে রইলাম
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :৩১
লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :৩৮
রোবোট বলেছেন: +
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :৪০
ভালোমানুষ বলেছেন: বড়ই এসলামি জোশ পাইলাম দেশে মালুম হইতাসে কম্ফুর গায়েও এসলামি বল আইসা পড়সে হুজুর কোন ক্ষতি হইব না তো আবার?
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :৪৬
লেখক বলেছেন: জ্বী না মানবের কর্মকান্ড দুনিয়াবীস্বল্পকালের, আর এসলাম পরম সুতরাং এসবে প্রকৃত এসলামের কিছুই হবে না অবশ্য প্রকৃত এসলাম যে কী জিনিস তাহার সন্ধান আইজও পাইলাম না
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা :৫৮
নাজিরুল হক বলেছেন: সবাই বলেন, সুবহানাল্লাহ :)
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :০৬
লেখক বলেছেন: “হা“-এর উচ্চারণটি হবে গলার মধ্যখান থেকে মাখ্বরাজ অনুযায়ী না হলে কিন্তু আরবী হা (যেটি নির্দেশ করতে আলহামদুলিল্লাহ্ কে লিখা হয় আলহামদুলিল্লাহ্) হয়ে যাবে বাংলা হা ফলে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাবে ক্রোধের শিকার হয়ে জান্নাত মিস হয়ে যেতে পারে আপনার বড়ই সূক্ষ্ণ বিধানরে ভাই সাবধানে
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :১৫
লেখক বলেছেন: আরো কথা হল, আরবীতেও বাংলা হা এর মতন আরেকটি হা আছে সাবধান
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :০১
ভালোমানুষ বলেছেন: প্রকৃত, অপ্রকৃত এসলামের নাম তো শুনলাম! আর কি কি ভার্সনের এসলাম আছে হুজুর? অদমের বড় জানবার শখ
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :১৪
লেখক বলেছেন: কী বলেন! কত ধরনের এসলাম আছে হিউম্যানিজম থেকে উদ্ভূত মানবতাবাদী ইসলাম, মধ্যপন্থীদের মডারেট ইসলাম, মার্কসবাদ থেকে সাম্যবাদী ইসলাম, মওদুদীবাদের ইসলাম, সুফীদের ইসলামকোনটা অস্বীকার করবেন ভাই?
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :০৫
শূন্য আরণ্যক বলেছেন: মোনাজাত শেষে সবাই হজুরের জন্য যে যা পারেন কিছু দেন —–
সবাই হলেনহক মাওলা —– এনশাল্লাহ
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :১৫
লেখক বলেছেন: আমেন
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :০৬
আলমগীর কুমকুম বলেছেন: সুবহানাল্লাহ্
. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :১৭
ভালোমানুষ বলেছেন: ঠিক কয়েচেন হুজুর

উপস্থিক হাজেরাইনে মজলিশ, অত:পর আপনেরা আপনেগো প্রতিপালকের কোন কোন অবদানরে অস্বীকার করবেন!

১০. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :১৭
নিঃসঙ্গ বলেছেন: সুবহানাল্লাহ (উচ্চারণটি হবে গলার মধ্যখান থেকে মাখ্বরাজ অনুযায়ী)
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :২৪
লেখক বলেছেন: এইতো!
১১. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :২২
কাঙাল মামা বলেছেন: শুকেসে নিলাম আরো লেখেন
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :২৫
লেখক বলেছেন: তাহলে আগেরগুলোও পড়েন
১২. ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :২৭
কুতুব্ বলেছেন: আমার এলেম তো হুজুরের লেবেলে না, তাই ওয়াজ পুরা না বুঝলেও এইটা বুঝলাম বুজতে পারলে পর অনেক সোয়াব হৈবো কৌসেশ করতেছি হুজুর দোয়া রাইখেন…………….
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত :২৯
লেখক বলেছেন: এলেমে ভান্ডার উপচে পড়তে হবে এমন কোথাও লেখা নেই

Nokia 5130c Xpress Music

Standard

Nokia 5130c Xpress Music
The Nokia 5130 XpressMusic is a quad band music phone with excellent audio quality. In addition to a 2 megapixel camera, the Nokia 5130 XpressMusic supports microSD cards for music files, pictures, video, contacts and more. Additional features include RDS Radio, Opera mini browser, Bluetooth 2.0, Flash Lite 3.0 and MIDP Java 2.1 with additional Java APIs.

Technical Specs
Developer Platform Series 40 5th Edition, Feature Pack 1
Operating System Nokia OS
Screen Resolution 240 x 320

General
Screen Resolution 240 x 320
Screen Color Depth 18 bit
Device Size 107.5 x 46.7 x 14.8 mm
Weight 88 g
Keypad Grid Key Mat
Other Keys 3 Labeled Soft Keys
5-way Scrolling
Media Keys
Frequency Bands GSM 1800
GSM 1900
GSM 850
GSM 900
Data Bearers CSD
EGPRS
GPRS
HSCSD

Extra Feautures

FOTA Firmware over the Air
Handsfree Speaker
MP3 Ringtones
Ovi Store
Stereo FM RDS Radio
SyncML
Themes

Browser, Flash and Web Runtime

Browser Details
HTML over TCP/IP
Opera Mini
WAP 2.0
XHTML over TCP/IP

Flash Technology
Flash Lite 3.0

Flash Lite Features
Screensaver
Wall Paper

Multimedia

Camera Resolution
1600 x 1200

CMOS Sensor
2.0 Megapixel

Camera Digital Zoom
4 x

Camera Image Formats
JPEG

Camera Features
Self Timer, Sequence Mode

Video Recording Resolution
176 x 144

Video Recording Frame Rate
15 fps

Video Digital Zoom
4 x

Video Recording Formats
H.263, MPEG-4

Video Features
Video Player
Video Recorder
Video Ringtones
Video Streaming

Video Playback Formats
3GPP formats (H.263), H.264/AVC, MPEG-4

Video Playback Frame Rate
15 fps

Graphic Formats
BMP, GIF87a, GIF89a, JPEG, PNG, WBMP

Theme Version
Series 40 Theme v3.0

Suggested Theme Template
Series 40 Blue Text
Series 40 White Text

Audio Features
Audio Equalizer
Audio Recorder AMR
Audio Streaming
Music Player

Audio Formats
AAC, AAC+, AMR-NB, AMR-WB, eAAC, eAAC+, MIDI Tones (poly 64), Mobile XMF, MP3, MP4, SP-MIDI, True tones, WMA

Memory Functions

Maximum User Storage
30 MB

NAND Memory
32 MB

Memory Card type
Micro SD

Memory Card Features
Hot Swap

Maximum Memory Card Size
2 GB

Maximum Heap Size
2 MB

Maximum JAR Size
1 MB

Connectivity

Local Connectivity
Bluetooth 2.0 +EDR
Bluetooth Stereo Audio
Micro USB
Nokia AV 3.5mm
USB 2.0
USB Mass Storage

Bluetooth Profiles
A2DP, AVRCP, DUN, FTP, GAP, GAVDP, GOEP, HFP, HSP, OPP, PAN, PBAP, SAP, SDAP, SPP

Messaging

Messaging
IM, MMS+SMIL, SMS

Messaging Features
OMA Multimedia Messaging Service v1.3

Supported Email Protocols
IMAP4, POP3, SMTP

Power Management

Power Management
2.0mm Charger Connector

Battery model
BL-5C 3.7V 1020mAh

GSM Talk Time up to
6.0 hours

GSM Standby Time up to
12 days

Music Playback Time up to
21.0 hours